মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১১

Daily Amardesh -ঢাকা,বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই ২০১১, ৩০ আষাঢ় ১৪১৮, ১১ শাবান ১৪৩২ হিজরী

Daily Amardesh -ঢাকা,বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই ২০১১, ৩০ আষাঢ় ১৪১৮, ১১ শাবান ১৪৩২ হিজরী

দিনব্যাপী গণঅনশন শেষে খালেদা জিয়া : পুলিশের বুটের নিচে আজ গণতন্ত্র : জনস্রোতে সরকার বিদায় হবে : স্বাধীনতা রক্ষায় আরেকটি সংগ্রাম করব

স্টাফ রিপোর্টার
বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। পুলিশের বুটের নিচে গণতন্ত্র। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ফিরিয়ে আনতে জনস্রোতের মাধ্যমে এ সরকারকে হটাতে হবে। নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নেমে আসার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে লাখো মানুষের গণঅনশনে খালেদা জিয়া এ আহ্বান জানান। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আট ঘণ্টার গণঅনশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতারা সংহতি জানান। বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর পুলিশের হামলা, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা, আল্লাহর নাম বাদ দেয়ার প্রতিবাদ এবং হরতালে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করে দলটি।
গণঅনশনের শেষ পর্যায়ে প্রায় এক ঘণ্টার বক্তৃতায় খালেদা জিয়া দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং গত আড়াই বছরের শাসনে সরকারের ব্যর্থতা ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ সবখানে আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডারদের বসিয়ে দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার অভিযোগ করেন বিরোধীদলীয় নেতা। ঈদের পর আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচি দিয়ে জনবিরোধী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করার ঘোষণা দেন তিনি। দুপুর ১২টা ১ মিনিটে বেগম জিয়া গণঅনশন মঞ্চে ওঠেন এবং একটানা সেখানে বসে থাকার পর সমাপনী ভাষণ দিয়ে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় শেষ করেন। এরপর শিল্পী বেবী নাজনীনের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক কর্মীরা জুস খাইয়ে তার অনশন ভাঙেন।
খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের মাত্র ৮ ঘণ্টার অনশন প্রতীকী কর্মসূচি মাত্র। দেশের লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিনই না খেয়ে থেকে অনশন করছেন। আজকের এ কর্মসূচি থেকে তাদের অনশন ভাঙানোর শপথ নিতে হবে। এ ব্যর্থ ও তাঁবেদার সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের অনশন ভাঙাতে হবে।
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সংবিধান আওয়ামী লীগের দলীয় ইশতেহারে পরিণত হয়েছে। যেদিন জনগণের সরকার ক্ষমতায় আসবে, সেদিন এই সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন এদেশে হবে না। অন্য কোনো পদ্ধতির নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। বিএনপি অংশ না নিলে এরশাদ-হাসিনার নির্বাচন এদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না। তারা পুরাতন বন্ধুত্ব এখনও বজায় রেখেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে সাজানো নির্বাচন তারা করেছিল। এদেশের জনগণ তা মেনে নেয়নি।
খালেদা জিয়া বলেন, সরকার উচ্চ আদালতের রায়ের অজুহাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করার কথা বলে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। কেননা আদালতের রায়েও আগামী দু’বারের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা না করার বিষয়ে ওই রায়ে যেহেতু একটি নির্দেশনা ছিল, সেহেতু এ বিষয়ে বিকল্প চিন্তা নিয়ে আমরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ করার আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করব না। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
বেগম জিয়া বলেন, সরকার কাদের জন্য যেন সিলেটে স্পেশাল ইকোনমিক জোন করবে। কিন্তু দেশের কৃষিজমি ধ্বংস করে বিদেশিদের জন্য কোনো ইকোনমিক জোন করতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, বর্ডার সিকিউরিটিকে ওপর থেকে নির্দেশ দেয়া হয় না বলে বিদেশিরা জমি দখল করলেও তারা কিছু করতে পারে না। বর্ডারে ফেলানীর লাশ ঝুলতে দেখেছেন। কিন্তু সীমান্তরক্ষীরা কিছুই বলতে পারেননি।
খালেদা জিয়া বলেন, জনগণ জাগলে কোনো পিস্তল-কামান-রাইফেল দমিয়ে রাখতে পারে না। তার প্রমাণ দেখেছেন ১৯৯০ সালে। আবার সময় এসেছে দেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশের সবকিছু পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের কী দিয়েছে, তার হিসাব জানতে চাই। ভারত থেকে আমরা কী পেয়েছি আর ভারতকে কী দিয়েছি—এ বিষয়টা সরকারের যদি সত্ সাহস থাকে, তাহলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগণকে জানানোর আহ্বান জানান তিনি।
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেন, এখন শুনছি তিস্তার পানির চুক্তি হবে। কিন্তু কী চুক্তি হবে জানি না। টিপাইমুখ বাঁধের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই বাঁধ হলে দেশের কী ক্ষতি হবে তা সবাই জানেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি চলছে। এখন আবার বিদ্যুত্ও সেদেশ থেকে আনবে। কিন্তু কী শর্ত তা জানি না। তবে জনগণের যদি স্বার্থ না থাকে, তাহলে জনগণ তা মেনে নেবে না।
বেগম জিয়া বলেন, বাগেরহাটে কয়লাচালিত পাওয়ার প্লান্ট করা যাবে না। পাশেই সুন্দরবন। এর ফলে সেখানে লবণাক্ততায় ভরে যাবে। সুন্দরবন ধ্বংস হবে। সেজন্য বাগেরহাটে কোনো পাওয়ার প্লান্ট করতে দেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, যত সংগ্রাম করতে হয় করব। দেশের জন্য রক্ত দেব। স্বাধীনতা রক্ত দিয়ে এনেছি। এদেশের মানুষ সংগ্রাম করে স্বাধীনতা এনেছে। কারও কাছে মাথানত করব না। কোনো দেশের সঙ্গে আমাদের বৈরিতা নেই। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকবে। কিন্তু তা হবে সমমর্যাদার ভিত্তিতে।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে বলব—এখন তোমাদের সময়। রক্ত দেব, তবুও দেশকে কারও পদানত হতে দেব না।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, আজ কষ্ট করে অনশন করেছেন, এর পরের কর্মসূচি দেব, তাতে শরিক হবেন। শুধু আপনারাই নন, পরিবারের লোকদেরও অংশ নিতে হবে।
তিনি বলেন, মানুষ দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করব, যেভাবে আরব দেশগুলোতে হয়েছে। জনস্রোতের মাধ্যমে এ সরকারের বিদায় হবে। দেশ স্বাধীন করেছি। স্বাধীন দেশকে স্বাধীন রাখার জন্য দরকার হলে আর একবার সংগ্রাম করব।
বিরোধীদলীয় নেতা বেগম জিয়া বলেন, যখন আমরা সরকারে ছিলাম, তখন তারা কত হরতাল করেছে, কত জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর করেছে। তাদের বিশ্বাস করা যায় না। আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেছিলেন—বিরোধী দলে গেলেও হরতাল করবেন না। অথচ বিরোধী দলে গিয়ে ১৭৬ দিন হরতাল করেছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, ১৯৮৬ সালে তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, ‘এরশাদের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। যারা নির্বাচনে যাবে, তারা জাতীয় বেইমান।’ পরে তারা সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এবং নিজেদের জাতীয় বেইমান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। যারা জাতীয় বেইমান, তাদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের সরকার সামরিক শাসন জারি করেছিল। জিয়াউর রহমান সামরিক শাসন বাদ দিয়েছিলেন। একটি নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে এরশাদ ক্ষমতা দখল করল। বাহানা দিয়েছিল দুর্নীতি। সেই এরশাদকে মদত দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দেশে যত অবৈধ সরকার, তার সহায়ক কিংবা মূল শক্তিই হলো আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, ২২ জানুয়ারি ২০০৭ যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, সে নির্বাচন আওয়ামী লীগ করতে দিল না। তারা রাস্তায় লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছিল। তারপর ফখরুদ্দীন-মইন উদ্দিনকে নিয়ে এলো। সব সামরিক সরকারই তারা এনেছে। বেগম জিয়া বলেন, এরশাদ যখন ক্ষমতা দখল করলেন, তখন বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাত্কারে তিনি (শেখ হাসিনা) বললেন, ‘আই এম নট আনহ্যাপি’। মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারকে তারা বললেন ‘তাদের আন্দোলনের ফসল’।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ফখরুদ্দীন সরকার কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়। তারা ছিল একটি অবৈধ সরকার। তিনি বলেন, জামায়াত-জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিল। জ্বালাও-পোড়াও করেছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল ভালো ও বৈধ সরকার।
তিনি বলেন, তারা কোর্টকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। তাদের দলীয় লোক খায়রুল হককে সুপারসিড করে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ তাকে দিয়ে এসব কাজ করিয়েছে।
খালেদা জিয়া বলেন, কেন এই অনশন করছি? কারণ, গত ৬ ও ৭ জুলাইয়ের হরতালে পুলিশ বিএনপি নেতানেত্রীদের ওপর হামলা করে আহত করেছে। উদ্দেশ্য ছিল হত্যা করা। কারণ ফারুক একটু বেশি কাজকর্ম করেন। এ সরকারের লক্ষ্য—যে একটু বেশি কাজ করে, হয় তাকে হত্যা করতে হবে, না হয় গুম করতে হবে।
তিনি বলেন, তারা একবার ৭২ সালে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল, আবার এবার করল। তারা কোথাও জনসভা করতে দেয় না। মুক্তাঙ্গন বন্ধ করে দিয়েছে। কোনো জায়গা নেই, যেখানে জনসভা করতে পারবেন। মানববন্ধন করলে আক্রমণ, হরতাল করলে আক্রমণ অথচ এসবই গণতান্ত্রিক কর্মসূচি।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে সরকার দখলবাজি করেছে। বিশৃঙ্খলা করেছে। প্রশাসন পুলিশকে ব্যবহার করেছে। নির্বাচন কমিশন তাদের কিছু বলার ক্ষমতা রাখে না। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গত আড়াই বছরে লুটপাট, চাঁদাবাজি, খুন, গুম, প্রতিদিন সংবাদপত্রে শুধু মৃত্যুর খবর।
খালেদা জিয়া বলেন, সারাদেশে মানুষের কোনো কাজ নেই। দলে দলে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে আসছে। কিন্তু শহরেও কোনো কাজ নেই। তিনি বলেন, তাদের নেতা একটি সত্যি কথা বলেছিলেন, ‘সবাই পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি’। তারা ওএমএসের চাল পর্যন্ত লুট করে খায়। তাদের আর বেশিদিন ক্ষমতায় রাখা যায় না।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় জনগণকে অনেক ওয়াদাই করেছিল। কোনো ওয়াদা পূরণ করেনি। তারা মিথ্যা কথায় পারদর্শী। মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিল। খালেদা জিয়া বলেন, ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের সময় চাল ৪০ টাকা হয়েছিল। সেই চাল ১০ টাকায় খাওয়াবে বলেছিল আওয়ামী লীগ। বিএনপির সময় চাল ছিল ১৬ টাকা। এখন দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের হাত থেকে রক্ষা পেতে চায়।
তিনি বলেন, সংসদ একদলীয় হয়ে গেছে। আমাদের এমপি যেসব নোটিশ দিয়েছেন, আলোচনার জন্য তারা একটা নোটিশও গ্রহণ করেনি।
তিনি বলেন, দেশে বিদ্যুত্ নেই। অথচ প্রাইভেট সেক্টরে টেন্ডার ছাড়া অনেক চুক্তি করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিদ্যুত্ সমস্যার সমাধান হয়নি। গ্যাস সঙ্কট, পানি সঙ্কট, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। বিদেশে চাকরি নেই। দেশে শুধু আওয়ামী লীগের লোকদের বেছে বেছে চাকরি দেয়া হচ্ছে।
বিরোধীদলীয় নেতা বেগম জিয়া বলেন, এখন দেশে শুধু একদলীয় সরকার নয়, একটা জেলার কাছে বন্দি হয়ে গেছে। সেই জেলার নাম গোপালগঞ্জ। তিনি বলেন, যতক্ষণ না আপনারা জাগবেন ততক্ষণ জ্বালাবে। এত পুলিশ এলো কোথা থেকে? সব পুলিশ সেই জেলার। প্রশাসনে সেই জায়গার লোক।
তিনি বলেন, আলেম ওলামাদের হরতালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নিরীহ মানুষদের পিটিয়েছে। চৌধুরী আলম এক বছরের ওপর নিখোঁজ। তাকে এই সরকারের বাহিনীরাই ধরে নিয়ে গেছে।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, স্বাধীনতার পরে রক্ষীবাহিনী তৈরি করে ৪০ হাজার মানুষ হত্যা করেছিল। এখনও সেরকম হত্যা করছে। এদের ক্ষমতায় থেকে সরাতে হবে। তারা জানে, এখন যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাদের এদেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। তাই তারা ক্ষমতায় থেকে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও এমপিরা ক্ষমতায় থেকে আবার নির্বাচন করবে। ক্ষমতায় থাকলে তাদের এই পেটোয়া বাহিনীকে ব্যবহার করবে।
তিনি বলেন, তাদের সাহস থাকলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিত। ভালো কাজ করলে মানুষ আবার তাদের ক্ষমতায় বসাত। কিন্তু তাদের সে সাহস নেই।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তাদের সাবেক মহাসচিব জলিল লন্ডনে বলে দিয়েছে তাদের কীভাবে ক্ষমতায় আনা হয়েছিল। ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিন বুঝতে পেরেছিল, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় না আনলে তাদের কী অবস্থা হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের সব কাজের দায়-দায়িত্ব আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। তারা মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। অনেককে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, ভিকারুননিসার শুধু প্রিন্সিপালকে পদত্যাগ করলেই হবে না, তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। যদি না হয়, আমি মা-বোনদের বলতে চাই, আপনারা রাস্তায় নেমে আসুন, আমি আপনাদের পাশে আছি। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটিয়ে লাঞ্ছনামুক্ত একটি স্বাধীন সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই শেয়ারবাজারে এরকম ঘটনা ঘটে। ’৯৬ সালেও এমন হয়েছিল। সম্পদের হিসাব জনগণের কাছে দিতে হবে। তারা মনে করেছেন, জনগণ কিছু জানে না। কিন্তু জনগণ সব জানে।
সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, বিচার কাদের করবেন? নিজেদের বিচারের জন্য প্রস্তুত হোন। জয়নুল আবদিন ফারুক পাঁচবারের এমপি। পুলিশ তাকে দেখলে স্যালুট করার কথা। পুলিশের বুটের নিচে গণতন্ত্র। ফারুকের ওপর যারা নির্যাতন করেছে, তাদের বিচার করতে হবে। আমরা মামলা করতে চেয়েছিলাম, মামলা নেয়নি। উল্টো মামলা করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকে হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু ফারুককে নয়, এর আগে এ্যানীর ওপর হরতালের সময় নির্যাতন করা হয়েছে। এদিন দিন নয়। সামনে আরও দিন আছে। এ সরকার শেষ সরকার নয়। তাই র্যাব-পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, যারা এসব করছেন, এগুলো বন্ধ করুন। নইলে বিএনপি ক্ষমতায় এলে চাকরি করবেন না? চাকরি তো করতে পারবেনই না। তবে যেসব অন্যায়গুলো করেছেন, তার হিসাবগুলো দিতে হবে। শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের, আবদুস সালাম পিন্টু, নাসির উদ্দিন পিন্টু, লুত্ফুজ্জামান বাবরকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন বন্ধ করুন। নইলে ভালো হবে না। গোয়েন্দা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারাও বেশি বাড়াবাড়ি করছেন। এসব বাদ দিয়ে দেশের স্বার্থে কাজ করেন। প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। যারা দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করছে, পদোন্নতি পেতে তাদের নির্যাতন-হয়রানিতে যারা অংশ নিচ্ছে তাদের ভবিষ্যত্ ভালো হবে না। অন্যায়কারীরা কোনোভাবেই শাস্তির বাইরে থাকতে পারবে না। ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিন কেন দেশের বাইরে? তারা যদি অন্যায় না করে থাকে, দেশে আসুক। জনগণের সামনে চলুক। তারা অন্যায় করেছে বলেই দেশে এলে জনগণ তাদের ইট-পাথর মারবে।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতা ছাড়বে, তখন জনগণের সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে পারবে না। জনগণ তাদেরও ইট-পাথর মারবে।
তিনি বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। আগে যে সংবিধান ছিল, তাতে ছিল বিদেশের সঙ্গে চুক্তি করলে এক মাসের মধ্যে সংসদে পেশ করতে হবে। এখন তো সংবিধান থেকে তা তুলে দিয়েছে। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে চুক্তি করেছে এখনও প্রকাশ করেনি।
সব চুক্তি জনগণের সামনে প্রকাশের দাবি জানিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া বলেন, যত চুক্তি করেন, তা বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের সমর্থন লাগবে। আসলে আমাদের দেশে সরকার আছে বলে আমি জানি না। আসলে পেছনে যারা আছে তারাই চালাচ্ছে। তারা কিছু করতে পারছে না।
তিনি বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলেছে। আপনারা যা করতে পারেননি, জিয়াউর রহমান তা করতে পেরেছেন। আপনারা তো যুদ্ধ করেননি। তাই জিয়ার নাম মুছবেন কেন? আপনারা এয়ারপোর্ট থেকে জিয়ার নাম মুছতে পারবেন। কিন্তু মানুষের মন থেকে মুছতে পারবেন না। সেজন্যই খায়রুল হককে প্রধান বিচারপতি বানিয়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করেছিলেন।
গণঅনশনে দিনভর বক্তৃতা চলতে থাকে। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী নেতারা সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন। তারা সরকারের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা ও আন্দোলনের গতিপথ নিয়ে কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া প্রমুখ।
সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও মহাসচিব নাসির আল মামুন, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মো. ইসহাক, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেদোয়ান আহমেদ, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবদুল মালেক চৌধুরী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সদস্য সচিব আতিকুল ইসলাম, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, ভাসানী ন্যাপের মহাসচিব শেখ আনোয়ারুল হক, ইসলামিক পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মবিন, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তজা, ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, বাংলাদেশ পিপলস লীগের চেয়ারম্যান গরিবে নেওয়াজ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আবু নাসের রহমাতুল্লাহ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতা গৌতম চক্রবর্তী ও জয়ন্ত কুণ্ড।
পেশাজীবী ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও শত নাগরিক-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ, প্রোভিসি অধ্যাপক আ, ফ, ম ইউসুফ হায়দার, উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক জিন্নাতুন্নিছা তাহমিদা বেগম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শওকত মাহমুদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস শহীদ, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর আহমেদ মিরু, চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম, সাবেক সচিব আ, ন, হ আখতার হোসেন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ (অ্যাব)-এর সদস্য সচিব প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন, কবি আবদুল হাই শিকদার, কবি আল মুজাহিদী, ছড়াকার আবু সালেহ, বিজেএমইর সভাপতি এসএম ফজলুল হক প্রমুখ। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ জাতীয় নির্বাহ কমিটি, নগর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অনশনে অংশ নেন।
স্বতঃস্ফূর্ত অনশনে জনতার ঢল : সকাল ৮টা থেকেই গণঅনশনে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হন। সকাল ১০টার মধ্যেই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বর কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মঞ্চে অবস্থান নেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া মোনাজাতের পর সকাল সোয়া ১০টা থেকে নেতারা বক্তৃতা শুরু করেন। দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে আসেন দুপুর ১২টা ১ মিনিটে। এর মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের রাস্তা, পাশের পার্কসহ পুরো এলাকায় জনতার ঢল নামে। তপ্ত রোদের মধ্যেও মঞ্চের সামনের কোনো নেতাকর্মী ওঠেননি। দলের বিভিন্ন নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে মাঝে মাঝে মিছিল-স্লোগান দিলেও সবাই ছিল স্বতঃস্ফূর্ত।
সহকর্মীদের বক্তব্যে ঘুরেফিরে বিরোধী চিফ হুইপ : গণঅনশনে সবার বক্তব্যেই ছিল বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের হামলার ঘটনার প্রতিবাদ। জাতীয় সংসদে তার সহকর্মীরা পুলিশি হামলার ঘটনার বিবরণ ও প্রতিবাদ জানান। সেদিনের সেই বীভত্স হামলার বর্ণনা দিয়ে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জেডআই মোস্তফা আলী মুকুল, আশরাফ উদ্দিন নিজান, মোজাহার আলী প্রধান, আবদুল মোমিন তালুকদার, মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, আমজাদ হোসেন, লায়ন হারুন অর রশীদ, হাফিজুর রহমান, শাম্মী আক্তার, রেহেনা আক্তার রানু, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, নিলুফার চৌধুরী মনি প্রমুখ।
সঙ্গীত-প্যারোডিতে প্রতিবাদ : বিএনপির ৮ ঘণ্টাব্যাপী গণঅনশন কর্মসূচি চলাকালে জাসাসের শিল্পীরা গণসঙ্গীত, প্যারোডি, দলীয় সঙ্গীত, কবিতা পরিবেশন করে সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তাদের এ পরিবেশনায় গণঅনশনে আগত দলীয় নেতাকর্মী দারুণভাবে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। বেলা ১২টায় গণঅনশন চত্বরে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এসে পৌঁছা মাত্র জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)-এর শিল্পীরা গণসঙ্গীত শুরু করেন।
শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে বিএনপির দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন জাসাস নেতা ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী মনির খান, বেবী নাজনীন, রিজিয়া পারভীন, হাসান চৌধুরীসহ দেশের খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পীরা।
এরপর তারা একে একে গেয়ে শোনান ‘শোনের দেশের জনগণ, শুরু করলাম অনশন, গণতন্ত্রের হইল নির্বাসন... গ্রেনেড হামলার মামলাতে তারেক ভাইয়ের দিলি নাম/মাথা ফাটিয়ে ছুলে নিলি ফারুক ভাইয়ের পিঠের চাম... বন্ধু কসম খাইয়া মাঠে নামলাম ঘরে ফিরুম না/বন্ধু কসম খাইয়া... এর মতো গণসঙ্গীত।
এ সময় মঞ্চে বসে গণসঙ্গীত উপভোগ করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
এছাড়াও জাসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমেদ স্বরচিত কবিতা, ফজলুল হক মিলন কবিতা, নাসিম আহমেদ বিদ্রোহী কবিতার অংশবিশেষ, জাসাস নেতা জাকির হোসেন প্যারোডি গান পরিবেশন করেন।
এদিকে খালেদা জিয়া গণঅনশন চত্বরে আসার পর মূল প্যান্ডেল ও এর আশপাশ এলাকায় লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। মূল চত্বর ছাপিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, মত্স্য ভবন মোড়, সড়ক ভবন চত্বর এলাকা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ সময় মূল মঞ্চের কাছে জায়গা নেয়ার জন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে ঠেলাঠেলি লেগে যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন