সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১১

‘আমরা তোদের পেটাবো তোরা সেই ছবি প্রচার কর'


‘আমরা তোদের পেটাবো তোরা সেই ছবি প্রচার কর'
সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ\ আহত ১০ বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা
পুলিশ কর্তৃক সাংবাদিকদের ওপর লাটিচার্জের প্রতিবাদে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকরা ক্যামেরা রেখে প্রতিবাদ জানায় -সংগ্রাম
স্টাফ রিপোর্টার : ‘আমরা তোদের (সাংবাদিক) পেটাবো, তোরা সেই ছবি প্রচার কর' গতকাল রোববার বিএনপি জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতালের সংবাদ কভার করতে গেলে নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে এভাবেই ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে হুঙ্কার ছেড়ে কথা বলেন, র্যা ব কর্মকর্তা এমারত। তিনি বার বার ‘তেড়ে' অসেন সাংবাদিকদের ওপর। এছাড়া একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা খুবই বাজেভাবে গালিগালাজ করে সাংবাদিকদের। দফায় দফায় সাংবাদিকদের ওপর বেধড়ক লাঠিপেটা চালায় পুলিশ ও আইন-শৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এতে অন্তত ১০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন ৫ জন। হরতালে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশী নির্যাতনের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেন সাংবাদিকরা। পরিচয় নিশ্চিত জেনেও এভাবে পৈশাচিক কায়দায় সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়া বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনগুলো সাংবাদিকদের ওপর পুলিশী নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হামলার সাথে জড়িতদের শান্তি দাবি করেন।
গতকাল বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনাদের ডাকা ৩৬ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিনে বরাবরের মতো সাংবাদিকরা সকাল থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গতকাল পুলিশ থাকে পেয়েছে তাকেই ‘ছোঁ' মেরে প্রিজনভ্যানে ঢুকিয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকরা নিজেদের মত করে ছবি তুলছিলেন। সকাল ১০টার দিকে মহিলা দলের সভনেত্রী নূরে আরা সাফা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তাকে টানা-হেঁচড়া করে গাড়িতে তোলায় সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলছিলেন। এ সময় ছবি তুলতে বাধা দেয় পুলিশ। এ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ‘শালাদের মার' (সাংবাদিক) বলেই লাঠিপেটা শুরু করে। সাদা পোশাকের এই পুলিশ কর্মকর্তা নিজেকে সরকারের ‘বাপ' বলে পরিচয় দেয়। এরপর যত বারই সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গিয়েছেন ততবারই পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করেছে। এর মধ্যে গুরুতর আহতরা হলেন চ্যানেল আইয়ের মঞ্জুরুল ইসলাম বাবু, এটিএন বাংলার মহসিন, দেশ টিভি'র শিবলী, এনটিভি'র তাপস, আরটিভি'র মনির হোসেন, কালের কণ্ঠ'র রফিকুর রহমান রেকু।
এদিকে পুলিশ ও আইন-শৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে আহত সাংবাদিকরা এর বিচার চাইতে গেলে আরও মারার হুমকি দেয় পুলিশ ও র্যা ব। এ সময় এমারত নামে এক র্যা ব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তোদের পেটাবো, তোরা সেটা ছবি তুলে প্রচার কর'। পুলিশ ও র্যা বের এমন আচরণের প্রতিবাদে সাংবাদিকরা বেলা ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে। এ সময় সবাই কলম, প্যাড, ক্যামেরা মাটিতে রেখে রাস্তায় কলম বিরতি চালায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের ডিসি আনোয়ার এসে হামলাকারীদের বিচারের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা কর্মবিরতি তুলে নেন। কর্মবিরতি পালনকালে সাংবাদিকদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নির্বাহী সদস্য ইলিয়াস হোসেন, প্যাথিক দ্যা কস্টা, শফিক আহমদ, এইচএম সাগর, চয়ন রহমান, মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
সাংবাদিকদের লাঠিপেটা ছাড়াও গতকাল সকাল থেকেই পুলিশ সংবাদ কর্মীদের ওপর বেপরোয়া আচরণ করে। সকালে যারাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চেয়েছে পরিচয়পত্র দেখানোর পরও তাকে হেনস্তা করা হয়েছে। পুলিশ দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার গাড়ি চালক রফিকুল ইসলামকে বেধড়ক পেটায়। তাকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ অনেককেই গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যেতে বাধ্য করে।
বিএফইউজে-ডিইউজে
গতকাল বিরোধী দলের হরতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশী নির্যাতনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে নেতৃবৃন্দ। বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব শওকত মাহমুদ এবং ডিইউজে সভাপতি আবদুস শহিদ ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দল আহূত ৩৬ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিনে গতকাল রোববার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার রিপোর্টার ক্যামেরাম্যান ও ফটোসাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় পরিচয় নিশ্চিত হয়েও পুলিশ সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়। এখানে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার অনেক সাংবাদিক আহত হয়। কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি। উল্টো তারা সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসেন এবং অশোভন ভাষা ব্যবহার করেন। এদিকে এফডিসির সামনে দিয়ে আসার সময় পুলিশ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট ছড়াকার আবু সালেহ'র ওপর হামলা চালায়। সাংবাদিক পরিচয় দেয়া সত্ত্বেও পুলিশ তাকে রক্তাক্ত করে দেয়। এই প্রবীণ সাংবাদিকের ওপর এমনভাবে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় যে, তাকে অচেতন অবস্থায় রাজধানীর আদদ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বারবার এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও অব্যাহতভাবে পুলিশ সাংবাদিকদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। তারা সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করছে এবং সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা বলেন, এহেন বর্বরোচিত আচরণ কোন সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা ব্যাহত হবে, যা গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি দাবি জানান। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন এবং এ ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের আইনানুগ শাস্তি প্রদানের দাবি জানান। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রেসক্লাব
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, গতকাল এক বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, হরতালকে কেন্দ্র করে এমন কিছু অনাকাক্মিখত ঘটনা ঘটছে যা কাম্য নয়। হরতাল চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের ওপরে পুলিশের এই বেপরোয়া হামলায় আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিকাশ প্রক্রিয়ার ধারায় এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের হামলা ও নির্যাতন থেকে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিরত ও সংযত আচরণ করার আহবান জানাই।
বিএফইউজে-ডিইউজে
গতকাল বিরোধী দলের হরতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশী নির্যাতনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে নেতৃবৃন্দ। বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব শওকত মাহমুদ এবং ডিইউজে সভাপতি আবদুস শহিদ ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দল আহূত ৩৬ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিনে গতকাল রোববার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার রিপোর্টার ক্যামেরাম্যান ও ফটোসাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় পরিচয় নিশ্চিত হয়েও পুলিশ সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়। এখানে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার অনেক সাংবাদিক আহত হয়। কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি। উল্টো তারা সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসেন এবং অশোভন ভাষা ব্যবহার করেন। এদিকে এফডিসির সামনে দিয়ে আসার সময় পুলিশ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট ছড়াকার আবু সালেহ'র ওপর হামলা চালায়। সাংবাদিক পরিচয় দেয়া সত্ত্বেও পুলিশ তাকে রক্তাক্ত করে দেয়। এই প্রবীণ সাংবাদিকের ওপর এমনভাবে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় যে, তাকে অচেতন অবস্থায় রাজধানীর আদদ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বারবার এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও অব্যাহতভাবে পুলিশ সাংবাদিকদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। তারা সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করছে এবং সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা বলেন, এহেন বর্বরোচিত আচরণ কোন সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা ব্যাহত হবে, যা গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি দাবি জানান। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন এবং এ ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের আইনানুগ শাস্তি প্রদানের দাবি জানান। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রেসক্লাব
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, গতকাল এক বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, হরতালকে কেন্দ্র করে এমন কিছু অনাকাক্মিখত ঘটনা ঘটছে যা কাম্য নয়। হরতাল চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের ওপরে পুলিশের এই বেপরোয়া হামলায় আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিকাশ প্রক্রিয়ার ধারায় এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের হামলা ও নির্যাতন থেকে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিরত ও সংযত আচরণ করার আহবান জানাই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন