সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১১

সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে এটিএম আজহার আমরা কারো বিরুদ্ধে নই, জনগণের পক্ষে


সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে এটিএম আজহার

আমরা কারো বিরুদ্ধে নই, জনগণের পক্ষে

ShareNew
 0  0
সোনার বাংলা রিপোর্ট
জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, আমরা কারো বিরুদ্ধে নই, আমরা জনগণের পক্ষে। সরকারের কোন কাজ যখন দেশ ও জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, তখন আমরা সরকারকে সতর্ক করি। সতর্ক না হলে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করি।   তিনি বলেন, সরকার তাকওয়া অর্জনের এ মাসে সংবিধান থেকে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও আস্থা তুলে দিয়েছে। যা তাকওয়ার পরিপন্থী। আল্লাহর হুকুম যথাযথভাবে পালনের নামই হচ্ছে তাকওয়া। আর আল্লাহ আমাদের তাকওয়া অর্জন করার জন্যই রোজাকে ফরজ করে দিয়েছেন। শুধু পানাহার পরিত্যাগ করলেই রোজার হক আদায় হয় না বরং সকলপ্রকার পাপাচার-অনাচার থেকে মুক্ত থাকাই হচ্ছে রোজার প্রকৃত শিা। আর রোজা থেকে প্রকৃত কল্যাণ লাভ করতে হলে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা একান্ত অপরিহার্য। তাই আমাদের রোজার হক যথাযথভাবে আদায় করেই রোজা পালন করতে হবে। আর তা করতে পারলেই আমরা রোজা থেকে উপকৃত হতে পারবো। তিনি রমযানের শিায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন গঠনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
গত ১৪ আগস্ট বিকালে জাতীয় প্রেসকাব মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ এমপি’র পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক তাসনীম আলম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহনগরীর সহকারী সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল ও মাওলানা আব্দুল হালিম, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট মশিউল আলম, মোহাম্মদ ফরিদ হোসাইন, মহানগর জামায়াতের প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।
বিশিষ্ট সাংবাদিকদের সম্মানে জামায়াতের আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব শওকত মাহমুদ, জাতীয় প্রেসকাব সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, নিউজ টুডে সহযোগী সম্পাদক আমানুল্লাহ কবির, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট সাদেক খান, দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা মোবায়েদুর রহমান, জাতীয় প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল আলম, নিউ নেশন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস শহিদ, সেক্রেটারি বাকের হোসাইন, দৈনিক আমার দেশের সহকারী সম্পাদক কবি আব্দুল হাই শিকদার, ডিইজে’র সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, দৈনিক আমার দেশের  সহকারী সম্পাদক শাহ আহমদ রেজা, বিএফইউজে’র সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, বার্তা নিউজ ২৪ এর সম্পাদক সরদার ফরিদ আহমদ, ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি শফিউদ্দীন বিটু ও সেক্রেটারি মির আহমেদ মিরু, দিগন্ত টিভি’র ডিইডি মজিবুর রহমান মঞ্জু, নয়া দিগন্তের বার্তা সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলি, বিশিষ্ট ছড়াকার কবি আবু সালেহ, সাব-এডিটর কাউন্সিলের সভাপতি মুকুল তালুকদার, দৈনিক সংগ্রামের বার্তা সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া, দৈনিক সমাচারের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আলমগীর হোসেনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এটিএম আজহার বলেন, সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকলে রোজা থেকে প্রকৃত কল্যাণলাভ করা সম্ভব নয়। ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত হলো হালাল রুজি উপার্জন। কিন্তু আমাদের দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে আমরা সুদ, ঘুষসহ বিভিন্ন প্রকার অনৈতিকতা থেকে মুক্ত থাকতে পারছি না। দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত থাকলে কোনো প্রকার অনৈতিকতা থাকবে না। আর এমন একটি ইসলামী সমাজে মানুষের পে রোজা থেকে উপকৃত হওয়া সম্ভব। তাই আমাদের ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। আর এ কাজ আল্লাহ আমাদের ওপর ফরজ করেছেন। তিনি ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা দেশের মানুষের জন্য সুশাসন উপহার দিতে পারেনি। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সকল সময়ের চেয়ে খারাপ পর্যায়ে। সরকার কোনোভাবেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। উপর্যুপরি সরকারি দলের জুলুম-নির্যাতনে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা। সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই বিরোধী দলের ওপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে। দেশের এমন অবস্থায় কোন সচেতন মানুষ ঘরে বসে থাকতে পারে না। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবিলায় সাংবাদিকদের সত্যনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান জানান। এটিএম আজহার বলেন, মানবরচিত কোন আদর্শ দিয়ে মানুষের কল্যাণ করা সম্ভব নয়। বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে হলে আমাদের ইসলামী আদর্শের দিকেই ফিরে আসতে হবে। আর্তমানবতার কল্যাণে ইসলামের বিজয় অনিবার্য। তিনি সাংবাদিকদের ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক তাসনীম আলম বলেন, আল্লাহ আমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করে দিয়েছেন, যাতে আমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারি। আল্লাহকে ভয় করে জীবন যাপন করার নামই হচ্ছে তাকওয়া। পবিত্র মাহে রমযানের মাধ্যমে আমাদের তাকওয়া অর্জন করার সুযোগ এসেছে। মূলত রমযান মাসে কুরআন নাযিল হয়েছিল  বলেই এ মাসের এতো মর্যাদা। আর আমরা কুরআন বুঝে জীবন গড়তে পারলেই ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তিলাভ করা সম্ভব। তিনি সকলকে রমযানের শিায় জীবন গড়ার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ ও দেশকে ইসলাম শূন্য করার জন্যই আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে আটক করে বিচারের নামে প্রহসন করছে। মূলত সরকার জামায়াতের ওপর জুলুম করছে। কিন্তু ইতিহাস সাী জালিমরা কখনোই বিজয়ী হয় না, সময়ের ব্যবধানে মজলুমরাই বিজয়ী হয়। তিনি জুলুম-নির্যাতন পরিহার করে আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর নিজামীসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ঈদের আগেই নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বলেন অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণই তাদের মুক্ত করবে।
Share

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন