সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১১

আলাউদ্দিন আল আজাদের মরদেহ


আলাউদ্দিন আল আজাদের মরদেহ

2009-07-05-14-33-22-July.....Five-06সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কথাসাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদের মরদেহ রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। ছবিঃ মুস্তাফিজ মামুন/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/ঢাকা, জুলাই ০৫, ২০০৯
2009-07-05-14-34-17-July.....Five-09

গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হলেন আলাউদ্দিন আল আজাদ
হাজারও মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ। তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাহিত্যিক, রাজনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও হাজারও অনুরাগী নারী-পুরুষ। শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, ব্যক্তি ও সংগঠন। আজ তাকে দাফন করা হবে। তবে, কোথায় দাফন করা হবে এ বিষয়ে গতরাত পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কবি পরিবারের পক্ষ থেকে যুগান্তরকে জানানো হয়, মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।
কবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ ছিলেন সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল। তার মৃত্যুতে আমাদের সাহিত্য জগতে অপরিমেয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। একই সঙ্গে তিনি কবির শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। অন্যদের মধ্যে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বাংলা একাডেমী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাব, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বারডেম হাসপাতালের হিমঘর থেকে কবির মরদেহ আনা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখান থেকে বেলা পৌনে ১টায় বাংলা একাডেমীতে কবির মরদেহ আনা হয়। সেখানে জানাজা শেষে কবির মরদেহ আবার বারডেমের হিমাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় কবির শ্যালক ও সাবেক তথ্য সচিব খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, তাদের দাবি সরকার যেন কবিকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের পাশে সমাহিত করার অনুমতি দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া পেলে সেখানেই তাকে দাফন করা হবে। মিলি রহমান বলেন, কবি পরিবারের পক্ষ থেকে তারা আলাউদ্দিন আল আজাদকে তার স্বামী বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের পাশে সমাহিত করতে চান।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। প্রথমে কবি পরিবারের পক্ষ থেকে স্ত্রী অধ্যাপিকা জামিলা আজাদ, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমানসহ স্বজনরা কফিনে ফুল দেন।
এরপর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হয়ে ফুল দেন তার এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর। এরপর একে একে ফুল দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক, প্রক্টর ড. সাইফুল ইসলাম খান, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপক মুস্তফা নূরউল ইসলাম, অধ্যাপক মুনসুর মূসা, হাসান ইমাম, নজরুল ইন্সটিটিউটের রশিদ হায়দার, কবি আবদুল হাই শিকদার, আবু সালেহ, সাংবাদিক স্বপন সাহাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, আলাউদ্দিন আল আজাদ স্যার যখন সিলেটের এমসি কলেজে শিক্ষকতা করতেন, তিনি তখন কবির ছাত্র ছিলেন। কবি আজাদ সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি ছিলেন প্রগতিশীল চিন্তাধারার মানুষ। অধ্যাপক মুস্তফা নূরউল ইসলাম বলেন, ৫২ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি শহীদ মিনার পুলিশ ভেঙে ফেলার পর কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ তার ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতা লেখেন। এই কবিতা বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। কবির মৃত্যুতে একটি নক্ষত্র ঝরে গেল। শুক্রবার রাতে আলাউদ্দিন আল আজাদ রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন